,
প্রচ্ছদ | জাতীয় | আন্তর্জাতিক | অর্থনীতি | আমেরিকা | লাইফ স্টাইল | ভিডিও নিউজ | ফিচার | আমেরিকা | বিনোদন | রাজনীতি | খেলাধুলা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | শিক্ষা

ইবাদতের নিয়ত কী ও কেন

এ বি এন এ : আল্লাহ তাআলা মানব ও জিন জাতিকে তাঁর ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। ইমানদার বান্দা ইবাদত করার আগে প্রথমে হদয়ে এর কল্পনা করে থাকে, তারপর তা বাস্তবায়নে সচেষ্ট হয়। স্মৃতিতে উদ্ভাসিত কাজ বাস্তবে রূপদান করার সুদৃঢ় প্রত্যয়ই হলো নিয়ত। নিয়ত হলো ইবাদতের মূল। নিয়ত ছাড়া ইবাদত পরিপূর্ণ হয় না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নিয়ত ছাড়া কোনো আমল গৃহীত হয় না।’ (সুনানে কোবরা : ৬/৪১) নিয়ত কী : নিয়ত আরবি শব্দ। এর অর্থ ইচ্ছা, অভিপ্রায়, অভিলাষ, উদ্দেশ্য, মনোবাঞ্ছা, প্রত্যয়, সংকল্প ইত্যাদি। পরিভাষায় আল্লাহ তাআলার আনুগত্য, সন্তুষ্টি, নৈকট্য ও তাঁর নির্দেশ পালনার্থে কোনো কাজ করার দৃঢ় সংকল্পকে নিয়ত বলে। নিয়ত কেন করতে হয় : নিয়ত প্রধানত দুটি কারণে করতে হয়—এক. অভ্যাস থেকে ইবাদতকে পার্থক্য করার জন্য। যেমন—পানাহার কখনো রাগের ফলে, কখনো চিকিৎসকের পরামর্শে, কখনো চাহিদা না থাকার কারণে বর্জন করা হয়। আবার কখনো বর্জন করা হয় রোজার কারণে। সুতরাং ব্যক্তি কী কারণে পানাহার বর্জন করেছে, তা জানার একমাত্র উপায় হলো নিয়ত। দুই. এক ইবাদতকে অন্য ইবাদত থেকে পার্থক্য করার জন্য। কেননা ইবাদত বিভিন্ন ধরনের। যেমন—ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত, নফল। সুতরাং নিয়তের মাধ্যমেই পার্থক্য হবে সে ফরজের নিয়ত করেছে, নাকি ওয়াজিবের, নাকি সুন্নাতের। ফরজ নফল আধা (ওয়াক্তিয়া) ও কাজার নিয়ত : ফরজ নামাজের মধ্যে ফরজের নিয়ত করতে হবে। নফল ও সুন্নাত নামাজ সাধারণ নিয়তে শুদ্ধ হয়ে যাবে। কোনো ব্যক্তি যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফরজ সম্পর্কে না জানে তার নামাজ শুদ্ধ হবে না। ইবাদতে ইখলাসের গুরুত্ব : ইবাদত করতে হবে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে। ইবাদতে কোনোরূপ লৌকিকতা থাকতে পারবে না। ইবাদত কবুল হওয়ার শর্ত হলো ইখলাস বা নিষ্ঠা। আল্লাহ তাআলা নিষ্ঠার সঙ্গে ইবাদত করার আদেশ করেছেন। যেমন আল্লাহর বাণী—(ক) ‘আমি আপনার প্রতি এ কিতাব নাজিল করেছি। সুতরাং আপনি নিষ্ঠার সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত করুন।’  (সুরা : জুমার, আয়াত : ২) (খ) ‘বলুন, আমি নিষ্ঠার সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত করতে আদিষ্ট হয়েছি।’ (সুরা : জুমার, আয়াত : ১১) (গ) ‘বলুন, আমি নিষ্ঠার সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত করি।’ (সুরা : জুমার, আয়াত : ১৪) (ঘ) ‘আপনি বলে দিন, আমার প্রভু সুবিচারের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তোমরা প্রতিটি নামাজে তোমাদের দৃষ্টি স্থির রাখবে এবং তাঁকে খাঁটি আনুগত্যশীল হয়ে ডাকবে।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ২৯) (ঙ) ‘যখন তাদের মেঘমালাসদৃশ তরঙ্গ আচ্ছাদিত করে নেয়, তখন তারা খাঁটি মনে আল্লাহকে ডাকতে  থাকে।’ (সুরা : লুকমান, আয়াত : ৩২) (চ) ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। সুতরাং তাঁকে ডাকো তাঁর খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে। (সুরা : মুমিন, আয়াত : ৬৫) হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত ওমর (রা.) বলেন, ‘আমি মহানবী (সা.)-কে বলতে শুনেছি, প্রত্যেক কাজের ফলাফল নিয়ত অনুসারে হয়। প্রত্যেক মানুষ তার কাজের ফলাফল আল্লাহর কাছে তদ্রূপ পাবে, যেরূপ সে নিয়ত করেছে। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে হিজরত করবে, সে অবশ্যই আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সন্তুষ্টি পাবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি পার্থিব ফায়দা হাসিল করার অথবা কোনো রমণীকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে হিজরত করবে, সে তার ফল তা-ই পাবে, যা সে নিয়ত করেছে।’ (বুখারি, হাদিস : ১) নিয়তের ক্ষেত্র : নিয়তের ক্ষেত্র হলো অন্তর। ফলে নিয়ত করতে হবে অন্তর দ্বারা। অন্তরের সংকল্প ছাড়া শুধু মুখে নিয়ত করলে যথেষ্ট হবে না। তবে যদি কেউ অন্তরকে স্থির রাখতে অক্ষম হয় অথবা অন্তরে নিয়ত করলে সন্দেহ সৃষ্টি হয়, তাহলে তার জন্য মৌখিকভাবে নিয়ত করা জায়েজ। মৌখিকভাবে নিয়ত : মৌখিকভাবে নিয়ত করার কথা রাসুল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম থেকে বর্ণিত হয়ে আসেনি। এমনকি কোনো দুর্বল হাদিসেও নেই। চার ইমামের কেউ মৌখিকভাবে নিয়ত করার কথা বলেননি। সুতরাং নিয়ত করতে হবে অন্তরের মাধ্যমে। অধিক মনোযোগ সৃষ্টির জন্য কেউ মৌখিকভাবে নিয়ত করতে চাইলে তার অনুমতি আছে। তবে তা অবশ্যই বিশুদ্ধ উচ্চারণে হতে হবে। অর্থ ও শুদ্ধ উচ্চারণ না জেনে আরবিতে নিয়ত করলে অর্থ বিকৃত হতে পারে। এর ফলে গুনাহ হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। ইবাদতের প্রকারভেদ ও নিয়তের বিধান : আমরা যত সব ইবাদত পালন করে থাকি, তা দুইভাবে বিভক্ত—(১) উদ্দেশ্যপূর্ণ বা মৌলিক ইবাদত। (২) উদ্দেশ্যহীন বা মূল ইবাদতের জন্য সহায়ক ইবাদত। উদ্দেশ্যপূর্ণ বা মৌলিক ইবাদত হলো নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ইত্যাদি। উদ্দেশ্যহীন বা মূল ইবাদতের সহায়ক হলো অজু, গোসল, তায়াম্মুম ইত্যাদি। মৌলিক ইবাদত নিয়ত করা ছাড়া শুদ্ধ হবে না। কেননা ফিকহিবদদের মতে, মৌলিক ইবাদত শুদ্ধ হওয়ার জন্য নিয়ত করা শর্ত। সুতরাং নিয়ত করা ছাড়া নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ইত্যাদি শুদ্ধ হবে না। উদ্দেশ্যহীন ইবাদত, যেমন—অজু, গোসল ইত্যাদি শুদ্ধ হওয়ার জন্য নিয়ত করা আবশ্যক নয়। নিয়ত করা ছাড়াও এসব ইবাদত শুদ্ধ হয়ে যাবে। তবে নিয়ত করলে সওয়াব পাওয়া যাবে। তায়াম্মুম ও মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়া উদ্দেশ্যহীন ইবাদত হওয়া সত্ত্বেও তাতে নিয়ত করা আবশ্যক। নিয়ত করতে হবে ইবাদতের শুরুতে। ইমাম মুহাম্মদ (রহ.) বলেন, ইবাদত শুরু করার আগে নিয়ত করতে হবে। রোজার মধ্যে সুবেহ সাদিকের আগের নিয়ত অথবা অর্ধদিবসের আগের নিয়তে ফরজ রোজা আদায় হয়ে যাবে। কাজা, মানত ও কাফফারার রোজা সুর্যাস্ত থেকে সুবেহ সাদিকের মধ্যবর্তী সময়ের নিয়ত এবং সুবেহ সাদিকের নিয়ত দ্বারা আদায় হয়ে যাবে। কোরবানির পশু ক্রয় করার সময় কোরবানির নিয়ত করবে। জাকাতের নিয়ত করবে জাকাতের সম্পদ আলাদা করার বা প্রদান করার সময়। হজের নিয়ত করবে নাম নিবন্ধন করার বা ইহরাম বাঁধার সময়। ইবাদতে নিয়ত করার অর্থ হলো ইবাদতে হদয়কে হাজির রাখা, আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশা করা, ইবাদত কবুল হওয়ার প্রত্যাশা করা, সব কাজ আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করা। ইবাদত করার সময় আল্লাহ তাআলা দেখছেন বলে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তুমি আল্লাহর ইবাদত এমনভাবে করো, যেন তুমি আল্লাহকে দেখছ, আর তুমি না দেখলে মনে করবে আল্লাহ তোমাকে দেখছেন।’ (মিশকাত)

লেখক : প্রধান ফকিহ, আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদ্রাসা, ফেনী 

Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali
Managing Director: Akbar Hossain
Executive Editor: Mehedi Hasan
E-mail : abnanewsusa@gmail.com
Usa Office: 289 West Koach Avenue, Egg harbor City, New Jersey-08215, Bangladesh Office : 60/1. Purana Paltan (2nd Floor), Dhaka-1000, Usa. Phone: +16094649559, Cell:+8801711040113, +8801912-621573
Server mannarged BY PopularServer
Design & Developed BY PopularITLimited